সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন মির্জা ফখরুলের ভাষায়: স্বাধীনতার শত্রুরা আবারো মাথাচাড়া দিতে চায় আ.লীগ বিনা শর্তে ক্ষমা চেয়েছিল ১৯৯৬ সালে: জামায়াতের আমিরের বিস্তৃত মন্তব্য নাহিদ ইসলাম: একাত্তর ও চব্বিশের দালালদের বিরুদ্ধে 우리는 একাত্ম তারেক রহমান বললেন, ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরব ইনশাআল্লাহ তারেক রহমানের অনুরোধ: আসবেন না এয়ারপোর্টে বিদায় দিতে ইনুর বৈধতা চেয়ে টেলিভিশনে সরাসরি বিচার সম্প্রচারের আবেদন ইইউ পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত বাংলাদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইসির আমন্ত্রণ, টিভি টক শোতে সকল প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিতের দাবি আন্দোলন চালিয়ে ভাতার দাবিতে অবরুদ্ধ করা অর্থ উপদেষ্টাকে, ১৪ কর্মকর্তা বরখাস্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের আরও তিন হত্যা মামলায় জামিন স্বীকৃতি
ভারত জাহাজ ভাঙা শিল্পে বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য হারাতে চায়

ভারত জাহাজ ভাঙা শিল্পে বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য হারাতে চায়

বৈশ্বিক জাহাজ ভাঙা শিল্পে শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখার লড়াইয়ে এগিয়ে এসেছে ভারত। বাংলাদেশকে এই খাতে আমাদের বৃহৎ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করে ভারতের সরকার সম্প্রতি এক নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করছে, যা দেশের বাজার দখলে আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেবে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের পাশাপাশি পাকিস্তানের কাছ থেকেও বাজারের অংশ ফিরে পেতে ভারতের এই উদ্যোগ বিশেষ লক্ষ্যপূরণে সহায়ক হবে। মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৬ সাল থেকে সারা দশ বছর ধরে দেশের জাহাজ ভাঙা শিল্পে দারুণ বিপ্লব আনার জন্য বিপুল অঙ্কের প্রণোদনা দেওয়া হবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারত তাদের জাহাজ ভাঙার খাতের অবকাঠামো ও ব্যবসা আরও তরতাজা করতে প্রায় ৪০ বিলিয়ন বা চার হাজার কোটি রুপি অর্থ সাহায্য ঘোষণা করতে যাচ্ছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশটি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কাছ থেকে বাজারের দখল ফিরিয়ে আনতে চাইছে বলে সূত্রগুলি জানিয়েছে।

প্রস্তাবিত এই প্রণোদনা ২০২৬ সাল থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী দশ বছর অব্যাহত থাকবে, এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভা চলতি সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই প্রস্তাবে অনুমোদন দিতে পারে।

প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায়, জাহাজ মালিকরা যদি পুরোনো জাহাজ ভারতে নিয়ে আসেন, তবে স্ক্র্যাপ মূল্যের প্রায় ৪০ শতাংশের সমপরিমাণ ক্রেডিট নোট পাবেন। এই নোট তিন বছর পর্যন্ত বৈধ থাকবে এবং মালিকরা ভারতে নির্মিত নতুন জাহাজ কিনতেও এটি ব্যবহার করতে পারবেন। একাধিক নোট একসাথে ব্যবহার বা বিক্রির সুবিধাও থাকছে।

এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো ভারতের জাহাজ পুনর্ব্যবহার খাতে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করা। সরকারী তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ভাঙা জাহাজের এক-তৃতীয়াংশ ভারত থেকে এসেছে, যেখানে বাংলাদেশ এককভাবে ৪৬ শতাংশ দখল করে রেখেছে।

তবে, ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বা প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে ভারতের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত আলাং শিপইয়ার্ড বিশ্বে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভাঙার কেন্দ্র। এই শিপইয়ার্ড থেকে ভারতের জাহাজ ভাঙার মোট ব্যবসার ৯৮ শতাংশ আসে। তবে, সস্তা শ্রম ও পর্যাপ্ত শ্রমশক্তির কারণে প্রতিবেশী দেশগুলো—বিশেষ করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান—এই বাজারের বড় অংশ দখল করে নিয়েছে।

কিন্তু সম্প্রতি এই খাতটি কিছুটা ঘুরে দাড়ানোর পথে। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে তেল ট্যাঙ্কার ভাঙার কাজ কমে গিয়েছিল, তবে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক সংকট ও পরিবর্তিত জাহাজ রুটের কারণে ভাড়া বাড়ছে। এর ফলে মালিকরা পুরোনো জাহাজের জীবনকাল দীর্ঘায়িত করতে সচেষ্ট হয়েছেন।

সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা সরিয়ে আনতে ভারতের পূর্ব উপকূলে নতুন জাহাজ ভাঙার কল, বা ঘাঁটি তৈরির পরিকল্পনাও চলছে।

এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার এই মাসে ২৫০ বিলিয়ন রুপি সমপরিমাণ সমুদ্রসংশ্লিষ্ট উন্নয়ন তহবিল অনুমোদন করতে যাচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য হলো দেশীয় জাহাজ নির্মাণে উৎসাহ দেওয়া ও বিদেশি জাহাজের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো। এই তহবিলটি ২০২৬ সালের মার্চ মাসে শেষ হওয়া বাজেটবর্ষের জন্য নির্ধারিত, যা দেশের সমুদ্রশিল্পের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd